দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠানকে অনেকদূর নিয়ে যেতে পারে


সৈয়দ আলমগীর

নির্বাহী পরিচালক, এসিআই লিমিটেড

দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠানকে অনেকদূর নিয়ে যেতে পারে

মানুষের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা একটি প্রতিষ্ঠানকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। শুধু মুনাফার আশায় ব্যবসা করলে তা বেশি দিন টেকে না।

যযে পণ্য মানুষ ভোগ করে তা যদি মানসম্পন্ন না হয় বা ক্ষতিকর কিছু থাকে তা কেউ গ্রহণ করবে না। সাময়িকভাবে হয়তো ব্যবসায়িক সফলতা থাকতে পারে। এই দায়বদ্ধতা শুধু পণ্যের মান নির্ধারণ নয় মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও বিবেচনায় নিতে হয়। দেশের অন্যতম বিপণন প্রতিষ্ঠান এসিআই লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সমাজের আর্থিক সঙ্গতি চিন্তা রেখে পণ্য বাজারজাত করতে হয়। এসিআই সেই দায়বদ্ধতা থেকে পণ্য বিপণন করে। বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সৈয়দ আলমগীর ১৯৯৮ সালে এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত ১৯ বছরে তিনি এসিআই কনজুমার ব্র্যান্ডসকে একটি মহীরুহে পরিণত করেছেন। কয়েক হাজার কর্মী নিয়োগ করেছেন। অনেক পণ্য বাংলাদেশে বহু ক্ষেত্রেই ১নং স্থান দখল করেছে। বাংলাদেশের ব্যবসা পরিবেশ, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক সক্ষমতা, প্রবৃদ্ধিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন এই স্বনামখ্যাত বিপণন বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, একটি সমাজের মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটানোর পরেই নতুন কিছু পেতে চায়। ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে বিলাসদ্রব্য কিনতে চায়। বাংলাদেশে মৌলিক চাহিদা মেটাতে দীর্ঘ সময় লেগেছে মানুষের। এখনো দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে ঠিকমতো খাদ্য জোগাতে অনেকে হিমশিম খায়। এসব অঞ্চলে বিলাসদ্রব্য কেউ কিনবে না।

" শুধু মুনাফার আশায় ব্যবসা করলে তা বেশি দিন টেকে না। যে পণ্য মানুষ ভোগ করে তা যদি মানসম্পন্ন না হয় বা ক্ষতিকর কিছু থাকে তা কেউ গ্রহণ করবে না। সাময়িকভাবে হয়তো ব্যবসায়িক সফলতা থাকতে পারে।
"

তবে বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। যার প্রভাব আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাচ্ছি। প্রতিদিন এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। সৈয়দ আলমগীর বলেন, খুব ধীরে হলেও দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে। বর্তমানে সরকারের নেওয়া সাতটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ আর্থিক সক্ষমতার শীর্ষ দেশ হবে। দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ। বাংলাদেশের জনশক্তি দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি মেধাবী। শ্রমিকদের কাজের মান, দক্ষতায় সারা পৃথিবীতে সমাদৃত এদেশের জনশক্তি। সঠিক ট্রেনিং পেলে তারা যে কোনো কাজ দক্ষতার সঙ্গে করতে পারে। এই জনশক্তির মেধা ও শ্রমের কারণেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সক্ষমতায় সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেভাবে বেড়েছে তাতে বোঝা যায় দেশ কতখানি এগিয়েছে। এসিআই লিমিটেডের এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা চলছে। বন্যার কারণে সেসব এলাকার লোক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্বাভাবিকভাবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কিছুটা কমেছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কিন্তু এটা থেকে বের হতে হলে সঠিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতির কারণে যদি এসব প্রান্তিক মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে না পারে তার প্রভাব দীর্ঘদিন থাকবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবসা পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। সরকার ভালো পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমি মনে করি যে কোনো সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নতি করেছে। সৈয়দ আলমগীর বলেন, এসিআই লিমিটেড বাংলাদেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। আমাদের পরিকল্পনা মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা। একাধিক দেশের বৃহৎ কোম্পানি আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে বাণিজ্য করছে। এসিআইয়ের গৌরব কয়েক হাজার কর্মী কাজ করছে আমাদের সঙ্গে। যাদের কখনো কোনো অভিযোগ নেই। এমনকি এ প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার হারও খুব কম। মানুষের একটি আস্থাশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিকে থাকবে এসিআই—এটাই আমাদের বড় পরিকল্পনা।

Press Coverage Links: